মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগীর সংজ্ঞা নিয়ে নতুন অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে?

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Email

লিমা খাতুন সিনিয়র রিপোর্টার রিপোর্টার:- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে সরকার।

গতকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে এই অধ্যাদেশ জারির পর এ নিয়ে বির্তক উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পাশাপাশি কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরেই মূলত এই বিতর্কের সূত্রপাত। যেখানে দাবি করা হয়, ‘শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদসহ চার শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি নতুন এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাতিল করা হয়েছে।

আদলতে বিষয়টি তেমন নয়। সংশোধিত অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার বা মুজিবনগর সরকার এবং উক্ত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনীকে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সে হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন। এছাড়া, জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মো. মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানসহ মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন স্বাক্ষরিত সংশোধিত জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার পাশাপাশি সহযোগীর সংজ্ঞাও নির্ধারণ করা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কারা?

অধ্যাদেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, ‘যাহারা ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে গ্রামে-গঞ্জে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং যেসব ব্যক্তি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করিয়া ভারতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করিয়াছিলেন এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় সহযোগী রাজাকার, আলবদর, আলশামস, তৎকালীন মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম এবং দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন, এরূপ সকল বেসামরিক নাগরিক উক্ত সময়ে যাদের বয়স সরকার

নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়সের মধ্যে; এবং সশস্ত্র বাহিনী, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর), পুলিশ বাহিনী, মুক্তি বাহিনী, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার (মুজিবনগর সরকার) ও উক্ত সরকার কর্তৃক স্বীকৃত অন্যান্য বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্য এবং বাংলাদেশের নিম্নবর্ণিত নাগরিকগণও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হইবেন।’

হানাদার ও দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগী কর্তৃক নির্যাতিত নারী বা বীরাঙ্গনারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।

মুক্তিযুদ্ধকালে আহত বীর মুক্তিযোদ্ধাগণের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী ফিল্ড হাসপাতালের সকল ডাক্তার, নার্স ও চিকিৎসা-সহকারীরাও বীর মুক্তিযোদ্ধা।

মুক্তিযোদ্ধা চলাকালে আহত কিংবা শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন।

যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ চলাকালে নিহত হয়েছেন সংজ্ঞা অনুযায়ী তাদেরকে বলা হবে ‘শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা’।

 

মুক্তিযোদ্ধা পরিবার বলতে বুঝাবে কোনো মুক্তিযোদ্ধার স্বামী বা স্ত্রী, পুত্র, কন্যা, পিতা ও মাতা।