স্বাধীন কন্ঠ ডেস্ক
বিজয়ের প্রথম বার্তা এসেছিল যশোর থেকে। যশোরেই প্রথম উঠেছিল বিজয়ী বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা। ১৯৭১ সালের ৬ডিসেম্বর দিনটির মধ্যভাগে যশোর সেনানিবাস ছেড়ে পালিয়ে যায় পাকবাহিনীরা। প্রথম শত্রুমুক্ত হয় যশোর জেলা। আজ সেই ঐতিহাসিক যশোর মুক্ত দিবস। এ যেন সেই উত্তাল দিনগুলোকে মনে করিয়ে দেয়। ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠ থেকে নতুন এক ইতিহাস তৈরি হয়েছিল। যে ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয় যশোরের নাম।
আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে উদযাপন করা হচ্ছে যশোর মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে শনিবার ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠের স্বাধীনতা মঞ্চের সামনে থেকে বিজয় র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে দিবসটির শুভসূচনা হয়।
এরপর বেলুন, ফেস্টুন ও কবুতর উড়িয়ে বর্ণাঢ্য এ র্যালির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহম্মদ আশেক হাসান। র্যালিটি টাউন হল মাঠ থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে। র্যালিতে আরও উপস্থিত ছিলেন, পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক রফিকুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুজন সরকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কমলেশ মজুমদার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইরুফা সুলতানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা সাধন দাস, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।
র্যালির উদ্বোধনকালে বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সাল আমাদের মাতৃভাষা মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই, ১৯৭১ পরাধীনতার গ্লানি থেকে আমাদের মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতা এবং ২০২৪ আমাদের জাতীয় জীবনে নতুন স্বপ্নে বাংলাদেশ গড়ার শপথ। ৫২ তে আমরা পেয়েছিলাম আমাদের মাতৃভাষা, ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের দিয়েছেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র, যে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। তা রক্ষায় আমাদের সর্বদা ঐক্যবদ্ধ ও একত্রিত থাকতে হবে। ২০২৪ এ আমাদের শিক্ষার্থীরা বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফের রাষ্ট্র গড়ার স্বপ্ন দেখিয়েছে। তারা আরও বলেন, ১৯৭১ এ ইতিহাস ঐতিহ্যের যশোর থেকে প্রথম বিজয়ের সূচনা হয়েছিল। বিজয়ে যশোর যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল তা যশোরবাসীকে গর্বিত করে। বক্তারা বৈষম্যহীন সমাজ ও ইনসাফের রাষ্ট্র গঠনে যশোরকে আবারও অগ্রণী ভূমিকা পালন করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে যশোর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। বিজয় র্যালিতে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ, জেলা পরিষদ, যশোর পৌরসভা, পুলিশ লাইন স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। এছাড়া দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে যশোর মুক্ত দিবস উদযাপন করা হচ্ছে। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শিক্ষক আহসান হাবিব পারভেজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোরের সাবেক যুগ্ম-সদস্য সচিব সোহানুর রহমান।




